আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ যত সময় গড়াচ্ছে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। জারি করা হল সেনা শাসন। সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সেনা এবং পুলিশের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়া হল বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার।
ফলে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের সুযোগ পাবে নিরাপত্তাবাহিনী। সোমবার সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার পর এই সিদ্ধান্ত নিল দেশটি।
সেদিন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সরকার সমর্থকদের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত এবং প্রায় দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়। এদিকে বিক্ষোভকারীদের থেকে উদ্ধার করে মাহিন্দা রাজাপক্ষে ও তার পরিবারের সদস্যদের একটি নৌঘাঁটিতে আশ্রয় দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর মঙ্গলবার সকালে রাজাপক্ষের বাসভবনের সামনে একটি হেলিকপ্টার অপেক্ষা করার ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েকজনকে বিমানবাহিনীর ওই হেলিকপ্টারে ওঠানো হচ্ছে। তাঁরা মাহিন্দা রাজাপক্ষের পরিবারের সদস্য বলে মনে করা হচ্ছে। টুইটারে ভিডিওটি প্রকাশ করেছে ডেইলি মিরর।
এদিকে গতকাল আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করলেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। কলম্বোতে কারফিউ জারি থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। এখন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাক্ষেরও পদত্যাগ চাইছেন তারা।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালালে মঙ্গলবার সকালে সেখান থেকে তাকে সরিয়ে নেয়া হয়। হামলার সময় বাসভবনে কমপক্ষে ১০টি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয় বলে জানিয়েছে একজন শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল ও জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। সহিংসতা এড়াতে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ।
এর আগে, সোমবার মাহিন্দা রাজাপাক্ষেসহ দেশটির মন্ত্রী, এমপি, সাবেক মন্ত্রী ও স্থানীয় নেতাদের বাসভবনে আগুন দেয়া হয়। জ্বালিয়ে দেয়া হয় মাহিন্দা রাজাপাকসের পৈতৃক বাসভবন।
এদিকে শ্রীলংকায় বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে সোমবার ঘোষিত কারফিউয়ের সময় বুধবার সকাল ৭টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কারফিউ চলাকালে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবেন না বলে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি ভ্রমণে এবং দেশটির অভ্যন্তরে চলাফেরায় সতর্কতা জারি করেছে বিভিন্ন দেশ। তবে শ্রীলংকার পর্যটন বিভাগ বলেছে, বেড়াতে আসা বিদেশিদের ট্রাভেল ডকুমেন্টকে তাদের কারফিউ পাস হিসেবে গণ্য করা হবে।
এদিকে শ্রীলঙ্কায় দেশজুড়ে সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংকট সমাধানে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ মহাসচিবের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক।