29.6 C
Rajbari
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
Homeআন্তর্জাতিকযুক্তরাজ্যে প্রথম হিজাব পরিহিত মহিলা জাজ ব্যরিষ্টার রাফিয়া আরশাদ

যুক্তরাজ্যে প্রথম হিজাব পরিহিত মহিলা জাজ ব্যরিষ্টার রাফিয়া আরশাদ


ডেস্ক রিপোর্টঃ যে মুহুর্তে ভারতের কর্ণাটকে শিক্ষার্থীদেরকে হিজাব পরার কারণে স্কুল কলেজে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না, সেই মুহুর্তে হিজাবী একজন মুসলিম নারী ইংল্যান্ডের প্রথম জাজ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বলে পুরনো খবরটি নুতন করে ছড়িয়ে পড়েছে। পুরনো মানে মাত্র দু বছর আগের ঘটনা। ২০২০ সালের। রাফিয়া আরশাদ হলেন যুক্তরাজ্যের প্রথম হিজাব পরিধান করা জাজ। তাকে তার পেশায় সফল হতে বা কৃতিত্বের সাথে ছাত্র জীবন শেষ করতে তার পোষাক কোন বাঁধা হয়ে দাড়ায় নি। কিন্তু আমাদের পারসেপসন কখনো কখনো কৌতুকপ্রদ হয়ে দাড়িয়েছিল। ২০০১ সালে তিনি যখন প্রথম সেখানকার ল স্কুলের স্কলারশীপ ইন্টারভিউতে যান তখন তাঁর বাসা থেকে বলা হয়েছিল তিনি যেন হিজাব খুলে তারপর ইন্টারভিউতে যান। কিন্তু তিনি সেদিন তার আত্নীয় পরিজনের কথা শুনেন নি। তিনি সেদিন হিজাব পরিধান করেই ইন্টারভিউতে গিয়েছিলেন এবং সেই দেশের মানুষের কাছে তার স্কলারশীপ ইন্টারভিউতে সফল হতে তার পোষাক কোন বাঁধা হয়ে দাড়ায় নি সেদিন। হিজাব পরা সত্তেও তাঁর ইন্টারভিউ সফল হয়েছিল এবং তিনি খুব ভাল এমাউন্টের স্কলারশিপ পেয়েছিলেন।

আরো একটি কৌতুকপ্রদ ঘটনা ব্যরিষ্টার রাফিয়া আরশাদ বর্ণনা করেছেন যিনি ২০২০ সালের মে মাসে ব্রিটেনের মিডল্যান্ড সার্কিটে ডেপুটি জাজ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। ঘটনাটি রাফিয়ার জাজ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগের। একদিন তিনি কোর্টে গেলে কোর্টের উষার (উষার হলো যারা কোর্টে জুরীদেরকে স্কর্ট করে কোর্টের ভেতরে নিয়ে যায় আবার কোর্টের সেশন শেষে স্কর্ট করে বাইরে এগিয়ে দিয়ে যায়) ব্যরিষ্টার রাফিয়াকে জিজ্ঞেস করে তিনি কি ইন্টারপ্রেটার হিসেবে এসেছেন? রাফিয়া না সূচক জবাব দিলে তাকে জিজ্ঞেস করা হয় তাহলে তিনি কি কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে এসেছেন? তখন রাফিয়া বলেছেন, না, আসলে আমি এখানে ব্যরিষ্টার হিসেবে এসেছি।

রাফিয়া এক সাক্ষাৎকারে মেট্রো নিউজকে বলেন, আমি কোর্টের উষারকে দোষ দিতে চাই না, তবে এটা আমাদের সমাজের একটা ধারনা যে কোর্টের একজন কর্মরত ব্যক্তিও মনে করেন যে যারা এইসব দেশের কোর্টে উপরের পদ গুলিতে কাজ করেন অর্থাৎ যারা জজ ব্যরিষ্টার হবেন তারা দেখতে আমার মত হবেন না।

রাফিয়া আরশাদ মেট্রোকে বলেন, “আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমি হিজাব খুলবো না কারণ আমার জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ন যে যিনি বা যারা আমাকে জব দিবেন, তারা আমি যেমন ঠিক তেমন ভাবেই তাদেরকে গ্রহণ করতে হবে, আমাকে যদি অন্য কারো রূপ বা বেশ ধারণ করে আমার প্রফেশনে সাকসেস হতে হয়, সেটা আমি কখনোই চাইতাম না।

চল্লিশ বছর বয়স্কা রাফিয়া আরশাদ বলেন জাজ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া আমার জন্যে শুধু নয় সকল মহিলাদের জন্যেই গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ করে মুসলিম মহিলাদের জন্য।

তিনি আরো বলেন, ছোটবেলা থেকে তিনি আশংকা করতেন যে তার পোষাক পরিচ্ছদ এবং জন্মগত ব্যকগ্রাউন্ড কি কখনো তাঁর পছন্দের পেশায় যেতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় কিনা! সেটি তিনি নিশ্চিত জয় করতে পেরেছেন যে কারনে ব্রিটেনে নিয়োগ পাওয়া নুতন এই জাজ বলেন, “আমি আমার জায়গা থেকে এই ডাইভারসিটি বা বৈচিত্রময় সমাজের আওয়াজটা পরিস্কার ভাবে সবাই যাতে শুনতে পায় সেটা নিশ্চিত করতে চাই।”

উল্লেখ্য যে ১লা এপ্রিল, ২০১৯ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের জনসংখ্যার মাত্র ৭ পার্সেন্ট জাজ ছিলেন সাদা বর্ণের বাইরের। এবং ৩০ পার্সেন্ট মহিলা।

 

 

RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments