মো. সাজ্জাদ হোসেন গোয়ালন্দ(রাজবাড়ী) প্রতিনিধিঃ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেকোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সমতূল্য। আর স্কুল হলো এমন একটি জায়গা যেখান থেকে আমরা প্রতিনিয়ত জ্ঞানার্জন করি। বিদ্যালয়কে মসজিদ,মন্দির,প্যাগোডা ও গীর্জার সাথে তুলনা করা হয়।
শিক্ষা সকলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা সবারই জানা কিন্তু বর্তমানে দেশে এমনও অনেক এলাকা রয়েছে যেখানে স্কুলের অভাবে শিশুরা ঠিকমতো শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে না।
সরকারের নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে বিদ্যালয় নির্মাণের কাজ করা হলেও নানা সমস্যার কারণে তা বন্ধ হয়ে থাকে নয়তো কার্যকর করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
তার পরেও গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়ন এলাকায় বাঘাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় যুদ্ধকালীন পরবর্তী ১৯৭২ সালে।
গোয়ালন্দ উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়ন প্রতিবছর নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়। এর অন্যতম একটি নদী ভাঙ্গন এলাকা দেবগ্রাম ইউনিয়ন।
দেবগ্রাম ইউপি এলাকায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই নদীগর্ভে তিনবার চলে গেছে। তিন তিনবার নদীগর্ভে বিদ্যালয়টি যাওয়ার কারণে বিদ্যালয় এর নির্দিষ্ট কোনো জমি ছিল না।
বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে দেবগ্রামের নদী কবলিতদের বরাদ্দকৃত আশ্রয় কেন্দ্রের জায়গায় একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করে বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য বার বার ভবনের কাজ এসে ফিরে যাচ্ছিল জায়গার অভাবে।
বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের বরাদ্দকৃত টাকা যায়গার অভাবে ফিরে যাওয়ার কথা শুনে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুদের কথা চিন্তা করে স্কুলটির প্রতি সুদৃষ্টি পরে গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোস্তফা মুন্সির।
তার এ উদারতায় বোঝা যায় পৃথিবীতে যে ভালো মানুষের অভাব নেই, তারই প্রমাণ মিলেছে সম্প্রতি মোস্তফা মুন্সির মানবিক স্বদিচ্ছায় জমি দান কাজে। চেয়ারম্যান নিজে তাঁর মূল্যবান ৩৩ শতাংশ জমি বাঘাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে দান করেছেন, যাতে এলাকার শিশুরা উন্নত শিক্ষা লাভ করতে পারে।
এবিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কবির হোসেন জানান, জমির অভাবে বাঘাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ হচ্ছিল না। এ সময়ে বিদ্যালয়ের জন্য ৩৩ শতাংশ জমি দান করলেন উপজেলা পরিষদের মানবিক চেয়ারম্যান মোস্তফা মুন্সি। আমরা এতে অনেক আনন্দিত। এমন নজির দেশে এখন বিরল।
বাঘাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চৌধুরী জানান, আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উন্নত শিক্ষার কথা চিন্তা করে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা মুন্সি ৩৩ শতাংশ জমি দিয়েছেন। আমরা অনেক আনন্দিত।
এপ্রসঙ্গে জমিদাতা গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা মুন্সি বলেন, আমার উপজেলায় শিক্ষার্থীরা যায়গার অভাবে পাঠদান করতে পারবে না এটা আমার জন্য কষ্টদায়ক। শিশুরা উন্নত বিদ্যালয় পড়বে এটাই আমার কামনা। আমার দায়িত্বের জায়গা থেকেই জমি দিয়েছি।