33.1 C
Rajbari
মঙ্গলবার, মার্চ ১৯, ২০২৪
Homeবিচিত্রতাফারিঘর: পোষা প্রাণীর আবাসিক হোটেল

ফারিঘর: পোষা প্রাণীর আবাসিক হোটেল

পোষা কুকুর-বিড়ালের জন্য আবাসিক হোটেল! শুনতে আশ্চর্য লাগলেও সম্প্রতি ঢাকায় যাত্রা শুরু করেছে এমন এক হোটেল। নাম ফারিঘর। থাকছে পার্লার থেকে শুরু করে মিউজিক ও বিনোদনের ব্যবস্থা। খরচও হাতের নাগালে। ৫০০-১৫০০ টাকা হলেই যে কেউ রাখতে পারবেন পোষা কুকুর ও বিড়াল।

ফারিঘরের সত্ত্বাধিকারী স্থপতি রাকিবুল হক এমিল বলেন, আপনি আপনার শিশুকে আত্মীয়ের কাছে রেখে বেড়াতে যেতে পারেন। কিন্তু চাইলেই আপনার প্রিয় পোষা কুকুরকে আপনি আত্মীয়ের কাছে রেখে যেতে পারবেন না। সবাই প্রাণীর সাথে অভ্যস্তও নন। এতে তাদের মানিয়ে নিতে সময় লাগে। তাই পোষা প্রাণীকে নিশ্চিন্তে রেখে যাওয়ার সব আয়োজন নিয়েই সাজানো হয়েছে ফারিঘর।

প্রতিষ্ঠানের আরেক সত্ত্বাধিকারী স্থপতি নুজহাত নাবিলা জানান, এখানে এতসব আয়োজন আছে, যাতে প্রাণীটির মনে হবে সে নিজের পরিবারেই আছে। পাশাপাশি থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরা। দূরে থেকেও দেখা যাবে।

প্রতিটি কুকুরের ঘরের দৈর্ঘ্য ৯ ফুট, প্রস্থ ৫ ফুট। আর বিড়ালের জন্য থাকছে ১৬ বর্গফুটের আলাদা আলাদা কেবিন। এসব ঘরে বিছানা-বালিশ তো আছেই। সেই সাথে প্রাকৃতিক কাজের জন্য থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা। এছাড়া বিশেষ আদর-আপ্যায়নের পাশাপাশি ক্যাট্রি, কুশন এবং লিটারের ব্যবস্থাও এখানে করা হয়েছে।

পাথর ও বালি দিয়ে ন্যাচারাল লিটারের সব বন্দোবস্ত করা হয়েছে। যা পোষ্যকে নির্দিষ্ট জায়গাতে বিশেষ কাজ করতে আগ্রহী করবে। সাথে থাকছে হ্যান্ডশাওয়ার ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা। ফলে প্রাকৃতিক কাজ করার সাথে সাথেই সেটি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে যে কারোরই সময় লাগে। পশুদের তো বটেই। তবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। পোষা প্রাণীদের একঘেয়েমি ও মানসিক অবসাদ দূর করতে থাকছে পর্যাপ্ত বিনোদন ব্যবস্থা, সাউন্ড সিস্টেম ও টেলিভিশন। আর সুস্থতা নিশ্চিতকরণে রয়েছে সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা। তবে সকল আয়োজন নিজেরা করলেও খাবার দেওয়ার ঝুঁকি নিতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। হতে পারে কুকুর বা বিড়ালটি সফট খাবার খেতে অভ্যস্ত কিংবা এলার্জিজনিত জটিলতা রয়েছে তার। তাই আহার-পানির ব্যবস্থা মনিবকে নিজেই করতে হবে।

বিনোদনের পাশাপাশি টিভি মনিটরের রয়েছে ভিন্নধর্মী কার্যকারিতা। প্যারেন্টরা চাইলে তাদের কোন ভিডিও তৈরি করে দিতে পারেন। এতে মনিটরের স্ক্রিনে পোষ্য প্রাণীরা যখন তার মনিবকে দেখতে ও শুনবে, তার মনে হবে সে আসলে নিজ বাসার মধ্যেই আছে।

অনেকে চাইলেও ইট-পাথরের এই নগরী ছেড়ে খোলা বাতাসে শ্বাস নিতে পারেন না, কেবল পোষ্য প্রাণীটির কথা ভেবে। প্রাণপ্রিয় পোষ্যের নিরাপত্তা নিয়েও অনেকে থাকেন শঙ্কিত। তাদের জন্য আদর্শ হতে পারে এই ফারিঘর। ফারিঘরজুড়ে রয়েছে অসংখ্য ক্যামেরা। তাই দূরে থাকলেও আপনি আপনার কুকুর বা বিড়ালকে পেয়ে যাচ্ছেন চোখের সামনে।

এছাড়া ছোট্ট একটি ক্যাফেও যুক্ত রয়েছে ফারিঘরে। তাই চাইলেই যে কেউ পোষা প্রাণীটিকে সাথে নিয়ে এখানে ঘুরতে আসতে পারেন। মিরপুরে অবস্থিত কুকুর, বিড়ালের আবাসিক হোটেল এই ফারিঘরে প্রতিরাতে কুকুরের জন্য গুনতে হবে ১৫০০ টাকা আর বিড়ালের জন্য লাগবে ৫০০ টাকা।

ফারিঘরের সত্ত্বাধিকারী রাকিবুল হক এমিল দীর্ঘদিন ধরেই প্রাণিকল্যাণে কাজ করছেন। পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ারের (প ফাউন্ডেশন) প্রতিষ্ঠাতা তিনি। আহত প্রাণিদের উদ্ধার ও চিকিৎসা প্রদান করা সহ অবলা প্রাণিদের প্রতি সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। (খবর ও ছবি: দৈনিক ইত্তেফাক)

RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments