
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধিঃ
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১জেলার প্রবেশদ্বার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাট দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি শেষে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে দেশের ব্যস্ততম শহর রাজধানীর কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে। পরিবারসহ বেশিরভাগ মানুষ দূরপাল্লার গণপরিবহনে ছুটছেন। এইজন্যই স্বাভাবিকের তুলনায় দূরপাল্লার বাসের চাপ বেড়েছে।

তবে ফেরিঘাট থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার যানজট থাকায় পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে রওয়ানা দিয়েছে বেশিরভাগ মানুষ। এদিকে ফেরিঘাট থেকে দূরপাল্লার গাড়ি বেশ দূরে থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চালকসহ হেলপাররা।
গরমে আটকা থেকে থেকে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কেউবা আবার গাড়ির মধ্যেই ঘুমিয়ে পরেন। ঘাটের নাগাল পেতে তাদেরকে অপেক্ষা করতে হয় প্রায় ৪ থেকে ৬ ঘন্টা পর্যন্ত। এতে যানবাহনের সারি দীর্ঘ হওয়ার পাশাপাশি যাত্রীবাহী বাস পারাপারে বিঘ্ন ঘটছে।
ফেরি বাড়ানো হলেও প্রয়োজনের তুলনায় দীর্ঘদিন ধরে ঘাট কম থাকায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ সোমবার সকাল থেকেই দৌলতদিয়া প্রান্তে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ৭ শতাধিকের উপরে যাত্রীবাহী বাস আটকে আছে।
সরেজমিনে দৌলতদিয়া ৫ নং ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় পল্টুনে অপেক্ষা করছে। ফেরি পল্টুনে ভেরার সাথে সাথে হুড়োহুড়ি করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফেরিতে উঠতে দেখা যায় অনেককে।
এসময় ফেরিতে থাকা পণ্যবাহী ট্রাক,ব্যক্তিগত গাড়ি,যাত্রীবাহী বাস আনলোড হওয়ার আগেই যাত্রীরা ফেরিতে প্রবেশ করতে শুরু করে।
পল্টুনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন যাত্রীর সাথে কথা বললে তারা জানান ঈদের ছুটি শেষ হয়েছে অনেক আগেই। আজকের মধ্যে অবশ্যই ঢাকায় পৌঁছাতে হবে। ৫ নং ফেরিঘাটে দুপুর ১ টায় খুলনার বাগের হাট হতে সোহাগ পরিবহনের যাত্রী মানিক হোসাইনের সাথে কথা হয়।
তিনি জানান খুলনা থেকে ভোরে রওয়ানা দিয়েছি। দুপুর ১২ টায় গোয়ালন্দের ফিড মিল এলাকায় এসে যনজটে আটকা পরি। সেখানে আটকে থাকি প্রায় দেড় ঘন্টার মতো। অবশেষে উপায় না দেখে পায়ে হেঁটে ফেরি ঘাটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা শুরু করি। দীর্ঘ সাড়ে ৫ কিলোমিটার হেঁটে ফেরি ঘাটে পৌঁছাতে পেরেছি। অনেকক্ষণ হলো পল্টুনে ফেরির অপেক্ষা করছি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায় , ঈদ উপলক্ষে গাড়ির বাড়তি চাপ সামলাতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় মিলে ২০ টি ফেরি চলাচল করছে ।
সোমবার (০৯ মার্চ ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট হতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দুই লাইনে গোয়ালন্দ ফিডমিল পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যাত্রীবাহী বাসসহ অন্যান্য যানবাহনের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে শতাধিক অপঁচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকও রয়েছে। যাত্রীবাহী বাসগুলোকে ফেরির নাগাল পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ৪ থেকে ৬ ঘন্টা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক ( বানিজ্য) মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকায় সোমবার সকাল হতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট-বড় মিলে ২০টি ফেরি চলাচল করছে।
এবার ঈদের আগে অধিকাংশ যাত্রীই ভোগান্তি ছাড়া নদী পার হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ঈদের পরে ঘাটে কিছুটা সিরিয়াল থাকলেও কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়া মানুষ কর্মস্থলে ফিরতে পারছে বলে তিনি জানান। তবে গতদিনের চেয়ে আজ ফেরিতে মানুষ পারাপারে চাপ একটু বেশি বলেই মনে হচ্ছে।