মো. সাজ্জাদ হোসেন, গোয়ালন্দ প্রতিনিধিঃ
“ধান ফুরালো পান ফুরালো খাজনার উপায় কি? আর কয়টা দিন সবুর করো রসুন বুনেছি!”
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার কৃষকেরা রসুন চাষে আগ্রহ হারাতে বসেছেন। চাষীরা বেশি লাভের আশায় পর্যাপ্ত রসুন চাষ করেছে উপজেলা ব্যাপী ফসলের মাঠে কিন্তু এবার বাজারে রসুনের দাম খুবই কম।
কাক্ষিত দাম না পাওয়ায় চলতি মৌসুমে রসুনের ভালো ফলন পেলেও উৎপাদন খরচ তুলতে হিমশিম খাচ্ছে কৃষক। অনেক পরিশ্রমের ফসল রসুন বিক্রি করে খরচের টাকাই উঠছে না কৃষকদের।
সরেজমিনে রসুন চাষী চর কর্ণেশনা মৌজার চাষী মোহাম্মদ আলী জানান, এ মৌসুমে পর্যাপ্ত রসুন উৎপাদন হলেও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় এবার এ চরাঞ্চলের আমরা যারা রসুন উৎপাদন করেছি প্রত্যেকেই রসুন চাষে আগ্রহ হারাতে বসেছি। চিন্তা করছি আগামীতে আর রসুন চাষ করবো না।
ক্ষেতে কাজ করতে থাকা কৃষকেরা দাবি করে বলেন, দেশের বাইরে থেকে রসুন আমদানির ফলে আমরা রসুনের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। রসুন চাষ করে এবার খরচের টাকা উঠছে না।
এ সময় রসুনের দাম বাজারে থাকার কথা ১৮ শ টাকা হতে ২ হাজার টাকা মন। সেখানে বাজারে রসুন মন প্রতি ৭শত টাকা থেকে ৮ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মন প্রতি ১ হাজার থেকে ১২ শত টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। আমরা আর সামনে বছরে রসুন আবাদ করবো কি না চিন্তা করছি ।
উজানচর মজলিশপুর এলাকার রসুন চাষী খালেক সরদার বলেন, এবার দু বিঘা জমি শনকড়ালি নিয়ে রসুন আবাদ করেছি। রসুন ভালো হয়েছে কিন্তু বাজারে রসুনের দাম খুব কম হওয়ার কারণে তাতে আমার লোকসান হবে ।
দু বিঘা জমিতে রসুন আবাদ করতে যে টাকা খরচ হয়েছে তার অর্ধেক টাকা ঘরে তুলতে পারবো কি না বলতে পাছি না।
দৌলতদিয়া মুন্সী পাড়ার রসুন চাষী জুলহাস সরদার বলেন, আমাদের প্রায় সব জমি নদীতে বিলিন হয়েছে। মাত্র বিঘা তিন জমি নদীর পারে ভালো ছিলো। সেই জমিতে এ বছর রসুন
চাষ করেছিলাম। রসুন অনেক ভালো হয়েছে কিন্তু বাজারে ভাল দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজবাড়ী ডটকমকে বলেন , এ বছরে গোয়ালন্দ উপজেলায় ২ হাজার ১৯ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ হয়েছে এবং রসুনের ফলনও ভালো হয়েছে। বাজারে রসুনের দাম কম থাকায় কৃষকরা লাভবান হতে পারছে না। আশাকরি খুব তাড়াতাড়ি বাজারে সন্তোষজনক দামে রসুন বিক্রি করতে পারবে কৃষকেরা।