মো. সাজ্জাদ হোসেন-গোয়ালন্দ প্রতিনিধি
দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া ঘাট এখন জন-জীবনের ভোগান্তির আর এক নাম। সাথে যোগ হয়েছে তাপদাহ্। ভোগান্তি ছাড়া বেশ কিছুদিন এ ঘাট পার হয়েছি বলে মনে পরে না। এভাবেই ক্ষোপ ও দুঃখ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন খুলনা পাইকগাছি থেকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে আসা আমিন বাজারগামী ট্রাকের চালক কবিররুল মোল্লা (৫৫)।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মকবুলের দোকান পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার এলাকায় দুই সারিতে পারের অপেক্ষায় আটকে আছে কয়েকশ’ যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ ছোট-বড় যানবাহন। এছাড়া ঘাট এলাকায় যানজট কমাতে ঘাট থেকে অদূরে গোয়ালন্দ মোড়ে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া মহাসড়কে অপঁচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে আটকে দিয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী । এতে করে প্রায় আরও ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পণ্যবাহী ট্রাকের সারির সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, বিভিন্ন কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-রুটে দৌলতদিয়া ঘাট পার হতে ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছে বৈ কমছে না। একদিকে নদী পার হতে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দীর্ঘ সময় সিরিয়ালে অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রীসহ পণ্যবাহী চালকদের। অপরদিকে সড়কে শৃঙ্খলা না থাকায় পাটুরিয়া থেকে ফেরিতে নদী পার হয়ে এসেও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতে দীর্ঘ সময় লাগছে এসব গাড়ীগুলোকে। এর উপর বাড়তি চাপ যোগ হয়েছে নাব্যতা সংকট, স্বল্পঘাট ও ফেরি সংকট। সব মিলিয়ে ভোগান্তি এখন চরম রূপ নিয়েছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে।
বিআইডব্লিটিসি দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমান ২০টি ফেরির ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। বাকি তিনটি রোরো (বড়) ফেরি পাটুরিয়ার ডক ইয়ার্ডে পূন মেরামতের কাজ চলছে। অন্যদিকে দৌলতদিয়া প্রান্তে মোট সাতটি ঘাট রয়েছে। এর মধ্যে চারটি ঘাট সচল রয়েছে। আর বাকী ৩ টি ঘাট প্রবল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ঘাট বন্ধ, ফেরি সংকট তার সাথে পানি কমতে শুরু করায় নতুন বিপত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে নাব্যতা সংকট। এ কারণে ব্যস্ততম এ নৌরুটে যানবাহন পারাপার ব্যহত হচ্ছে। যে কারণে প্রতিনিয়ত দৌলতদিয়া ঘাট অভিমুখে নদী পারের অপেক্ষায় যানবাহনগুলোকে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।